নব্য রাজাকারদের প্রতিরোধ করুন
লিখেছেন: তমসো দীপ
বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল ১৯৭১ এ। রাজাকারেরা ন’মাস মানুষ হত্যা ও ধর্ষণ করে গর্তে আশ্র্রয় নিল।চার বছর প্রাণ যাবার ভয়ে লুকিয়ে ছিল, তারপর এল ১৯৭৫। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে পরিবারসহ মেরে ফেলা হল। গর্ত থেকে বেরিয়ে আসতে লাগল ওরা। এরপর শুরু হল সামরিক শাসক জিয়ার আমল।
এ আমলে গোলাম আযমকেও বাংলাদেশে নিয়ে আসা হল। তারপর ১৯৮১, জিয়াও নিহত। এল এরশাদ। রাজাকারদের সে দুধে ভাতে পুষল কিছুদিন। ১৯৯০ সালে জনগণণ তাকে গদি থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিল।
তারপর শুরু হল গণতান্ত্রিক মাৎস্যন্যায়ের আমল।
বিএনপি ক্ষমতায় এল। রাজাকারবিরোধী গণআদালতের মাইক কেড়ে নেয়া হল। “জয় বাংলা” শ্লোগান অলিখিতভাবে নিষিদ্ধ হল। তসলিমা নাসরিনকে দেশ থেকে বের করে দেয়া হল। গোলাম আযম নাগরিকত্ব পেল।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এল। আধোঘুমে আধো জাগরণে মাছি মেরে চলে গেল তারা।
২০০১ সালে আবার বিএনপি গদিতে বসল, রাজাকারের দল জামাতকে সঙ্গে নিয়ে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা হল। ৫০০ স্হানে বোমা বিস্ফোরিত হল একই সময়ে। বোমা হামলা হতেই থাকল। হূমায়ূন আজাদ আক্রমণের শিকার হলেন।
২০০৬ সালে এই রাজাকার সরকারের মেয়াদ শেষ হলো। বছর দুই পর আবার ক্ষমতায় এল আওয়ামী লীগ। শুরু থেকেই এ সরকারকে গদিচ্যুত করার চেষ্টা শুরু হল।
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯। বাংলাদেশের মানুষ কিছু বুঝতে না বুঝতেই হয়ে গেল একটি গণহত্যা।
এমন কিছু যে হবে, চিন্তাও করে নি কেউ।
সেদিনের হত্যাকান্ড কারা করেছিল, তা এখনও প্রশ্নভুক্ত।
আমার একজন পারিবারিক বন্ধু, আমি তাঁকে আন্টি বলি- পুরো ঘটনাটা টেলিভিশনে দেখেছিলেন। তাঁর সাথে আমার আলাপ হয় এ ঘটনা নিয়ে। স্মৃতি থেকে কিছু কথা তুলে দিলাম-
আন্টি॥ বিডিআর হত্যাকান্ড নিয়ে তোমার অ্যানালাইসিস কি?
আমি ॥ আমার মনে হয় সেনাবাহিনী এটা করেছে।
আন্টি॥ সেনাবাহিনী এটা কেন করেছে বলে তোমার ধারণা?
আমি ॥ সেনাবাহিনীর যে প্রধান, মউন উ আহমেদ, সে কিন্তু খালেদা জিয়াভক্ত। আমার মনে হয় না সে হাসিনাকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। বিএনপি আমলে সে কিন্তু খালি খালেদা জিয়ার পেছন পেছন ঘুরত। খালেদা জিয়া যেখানেই যেত, সেও সেখানে লেজের মতন চলে যেত।
আন্টি॥ আচ্ছা বাবা, তোমার কি মনে হয় না এই ঘটনার পেছনে তৃতীয় কোন শক্তির হাত আছে?
আমি ॥ তৃতীয় শক্তি? কে?
আন্টি॥ ইসলামী জঙ্গি সংগঠন?
আমি ॥ ইসলামী জঙ্গি সংগঠনের হাত থাকবে কীভাবে?
আন্টি॥ দেখ বাবা, ৩৮ বছর যা হয়নি, এ সরকার আসার পর কিন্তু তাই হতে যাচ্ছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। তুমি কি মনে কর যারা যুদ্ধাপরাধী, তারা এখন চুপচাপ বসে থাকবে? কিছুই করবে না?
আমি ॥ না, তা না…..একাত্তরে যারা এত কিছু করেছে, তারা চুপচাপ বসে থাকবে কেন……………
আন্টি॥ ওদের এখন সামনে দু’টো রাস্তা- হয় বাঁচো, নয় মরো। তোমার কি মনে হয়, ওরা কোন রাস্তাটা বেছে নেবে?
আমি ॥ ন্যাচারালি দ্বিতীয় রাস্তাটা।
আন্টি॥ একজাক্টলি। কিন্তু ওরা এখন বাঁচবে কি করে বলোতো?
আমি ॥ পালিয়ে তো না………পালানোর সব পথ বন্ধ। কয়েকদিন আগে মুজাহিদ দেশের বাইরে যেতে চেয়েছিল, বিমানবন্দর থেকে ধরে নিয়ে আসা হয়েছে।
আন্টি॥ পালিয়ে ওরা বাঁচতে পারবে না। ওরা যদি কিছু করতে চায়, ওদের দেশের ভেতরেই করতে হবে।
আমি ॥ তার মানে?
আন্টি॥ আচ্ছা বাবা, এই যে সব জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ, হিযবুত তাহরীর – এরা কি জামাতে ইসলামীরই সন্তান নয়?
আমি ॥ তা তো বটেই।
আন্টি॥ দেখ বাবা, বিডিআরেরা এখন বলছে তাদের বিদ্রোহ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন অত্যাচারের বিরুদ্ধে। সে কথা, ঠিক একশবার ঠিক। আমি যখন বাজার করি, তখন শপিং মলগুলো থেকেই করি। এই কিছুদিন আগেও যখন আমি শপিং মলে গেছি, দেখেছি কীভাবে আর্মিদের বৌরা দামি দামি গয়না পরে দামি গাড়িতে চেপে এসে দামি দামি জিনিস কিনছে। আমি ভেবে পাই না কীভাবে এরা এত গাড়ি বরাদ্দ পায়। আর তাছাড়া একজন আর্মি অফিসারের বৌর এত টাকা থাকে কী করে! নানা সূত্রে নানা ইনভাইটেশনে আমি বহুবার আর্মি অফিসারদের বাসায় গেছি। তুমি বিশ্বাস করতে পাররবে না বাবা, ওদের বাসায় এত এত দামি দামি সব জিনিসপত্র, ইমম্পোর্টেড ক্রিস্টালের শোপিস- কী বলব, দেখে আমি ভীষণ অবাক হয়েছিলাম। এত টাকা ওরা কোথায় পায়! সেইসব বাসাতেই আমি দেখেছি, কিরকম চাকরের মত ওরা খাটায় বিডিআরদের! ওদের বাচ্চার কাঁথা-বিছানাও ওরাই ধুয়ে দেয়। ওরা তো এসব করার জন্য বিডিআরে ঢোকেনি। ওরা ঢুকেছে যুদ্ধ করার জন্য। অথচ ওদের কোন অপারেশনেই নেওয়া হয় না। যে অপারেশন ডাল-ভাতের কথা এখন বিডিআরেরা বলছে, সে অপারেশন ডাল-ভাতের সময় তো ওদের প্রচুর অপমানের শিকার হতে হয়েছে। ওদেরকে ৫০ কেজি চালের বস্তা দিয়ে বলা হত এতে ৪৫ কেজি চাল আছে, এটা যেন ওরা ৫০ কেজি বলে চালিয়ে দেয়।অথচ সেই বস্তার চাল মেপে দেখা গেছে সেখানে চাল আছে মাত্র ৪১ কেজি। তাহলে বাকি চাল গেল কোথায়? এই বাকি চাল সেনা কর্মকর্তারা নিজেরা মেরে দিত। আর বিডিআরেরআ যখন সেই চাল বিক্রি করতো, তখন চাল কম পড়ায় জনগণের ক্ষোভের মুখে পড়ত ওরা। তখন সেই সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারাই তাদের শাস্তি দিত। কখনো কখনো এমনও হয়েছে যে দেখা গেছে বিডিআরদের নিজেদেরই চাল কিনে দিতে হয়েছে।কখনো কখনো তো বেচারাদের কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখতো আর্মিরা। ওরা কিছুই বলতে পারতো না।ওদের ন্যায্য পাওনাটাও
দেওয়া হয়নি এই অপারেশনের জন্য।সব অত্যাচারেরই তো একটা শেষ আছে।কিন্তু কথা হচ্ছে ওদের ক্ষেপালোটা কে? ওরা কেউ কেউ ক্ষেপেই ছিলো, কিন্তু সবাই তো না।আমি যতদূর জানি, বিডিআর, আর্মি – সবার মধ্যে তিনটা ভাগ আছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি আর জামাত। কয়েক বছর ধরেই ক্রমাগত বিডিআরে জামাতের লোক ঢোকানো হচ্ছে। এরা একটা বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে বিডিআরে ঢুকছে। পাকিস্তানের একজন নির্বাসিত লেখক কিছূদিন আগে পাকিস্তান থেকে আমেরিকার প্রতি রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হয়েছেন।ভদ্রলোক এখন ওয়াশিংটনে বসেন। কয়েকদিন আগে তিনি একটা বই লিখেছেন, “পাকিস্তান মস্ক অ্যান্ড ইসলাম”। সেখানে তিনি দেখিয়েছেন, পাকিস্তান কিছুদিনের মধ্যেই তালিবানদের হাতে চলে যাবে, এবং এরপর সবচেয়ে খারাপ অবস্হায় আছে বাংলাদেশ।পাকিস্তান সম্পর্কে উনি যা ভবিষ্যতবাণী করেছিলেন, তা ইতিমধ্যে ফলে গেছে।একটা জিনিস আমি দেখলাম, মেজর শাকিলকে যারা মেরেছে, তারা শাকিলের বাসার সবকিছু লুট করেছে। আর ওদিকে শাকিলের বাসায় থাকা জরুরী রাষ্ট্রীয় দলিলগুলো সব হাওয়া।এর অর্থ কি বুঝেছো তো বাবা? যখন গাধা বিডিআরগুলো সোনাদানা লুট করতে ব্যস্ত, তখন আসল ঘুঘুরা দলিলগুলো লুট করে পালিয়েছে। তৌহিদের সাথে যে আরো চৌদ্দজন হাসিনার কাছে গিয়েছিল, তাদের কোনো ট্রেস পাওয়া যাচ্ছে না। আবার অনেকগুলো লাইফজ্যাকেট পড়ে আছে যেখানে-সেখানে।ওরা যে পালিয়েছে, এটার জন্য দায়ী কিন্তু মঈন উ আহমেদ। তাকেও ঠিক দোষ দিচ্ছি না, সে হয়তো ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে পড়েছিলো। তারা যেখানে যেখানে পাহারা বসিয়েছিলো, সেখানে সেখানেই ছিলো টিভি ক্যামেরাগুলো। আরে টিভি ক্যামেরার সামনে দিয়ে কেউ পালাবে নাকি? পালালে তো পালাবে পেছন দিকের ধানমন্ডির গলিগুলো দিয়ে।অথচ সেখানে কোনো পাহারাই ছিলো না। সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছে আসল শয়তানেরা।
আমি ॥ এদের এরপরের প্ল্যান কি আন্টি?
আন্টি॥ এরপর এরা আরো ভয়াবহ কিছু করবে।হাসিনা ক্ষমতায় থাকুক এটা ওরা চায় না।
আমি ॥ শেখ হাসিনার এখন অবস্থা কি?
আন্টি॥ উনি প্রচন্ড প্রেসারের মধ্যে আছেন।ওদিকে ওনাকে সেনা কর্মকর্তারা প্রায় একঘন্টা হেনস্হা করেছে ২৫ তারিখ। কোনো প্রধানমন্ত্রীকে কখনো এভাবে হেনস্হা করা হয়নি। বারবার ওনাকে প্রশ্ন করা হচ্ছিলো যে এত বড় একটা ঘটনা যখন ঘটে গেলো, তখন তিনি কি করছিলেন? সেইসময় কিছু লোক সব কথাবার্তা মোবাইল সেট দিয়ে রেকর্ড করেছে। সেসব এখন চারদিকে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। মানুষকে বলা হচ্ছে যে ইন্ডিয়া নাকি এটা করেছে। ইন্ডিয়া কেনো এটা করতে যাবে? ইন্ডিয়া কিন্তু শেখ হাসিনাকে পছন্দ করে।তারা পাগল হয়ে যায়নি যে শেখ হাসিনার সরকারকে তারা ভেস্তে দেবে।
আমি ॥ আর তাছাড়া সেরকম হলে তো ইন্ডিয়াকে আন্তর্জাতিক ক্ষোভের মুখেও পড়তে হবে। এমন আহাম্মকি ইন্ডিয়া করবে না। ইন্ডিয়া এমনিতেও কাশ্মীর ছাড়া কোথাও দখলদারিত্ব করেনি। কাশ্মীর পাকিস্তানের হাতে গেলে তো সর্বনাশ হয়ে যাবে।আমার মনে হয় কাশ্মীরকে এখন স্বাধীনতা দিয়ে দেওয়া উচিত।
সরকার কি এগুলো বুঝতে পেরেছে?
আন্টি॥ এখনো না।
আমি ॥ যদি আসলেই জামাতের লোকজন এই কান্ডের পেছনে থাকে, তাহলে তো এরা ভয়াবহ কিছু করতে পারে।যদি এমন কথার কোনো আলগা প্রমান পাওয়া যায় যে ইন্ডিয়াই এটা করেছে, তাহলে তো এরা শেখ হাসিনাকে বেশ্যা আখ্যা দিয়ে মেরে ফেলবে।
আন্টি॥ একজাক্টলি, বাবা। একজাক্টলি।
আমি ॥ আসলে বাংলাদেশের কোনো ভালো বুদ্ধিমান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নেই। পাকিস্তানের মত একটা দেশেও বেনজীর ভুট্টোর মত একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জন্মেছেন। অথচ আমাদের দেশে সব গাধা।মন্দের ভালো শেখ হাসিনা। খালেদা জিয়া তো একেবারেই বোকা, তাই না!
আন্টি॥ বোকা মানে? ২৫ তারিখে এত কান্ড যখন ঘটে গেলো, তখন শেখ হাসিনা করলেন কি, পরলেন কালো পাড় একটা সাদা শাড়ি। আর খালেদা প্রেস কনফারেন্সে এলেন গোলাপি শাড়ি পরে! মাঝে মাঝে আমি ভাবি, উফ, মহিলা কি পাগল?
আমি ॥ এখন তাহলে কি হবে?
আন্টি॥ এই মুহুর্তে সবচেয়ে জরুরী নিযামীদের ফাঁসি হয়ে যাওয়া। তাহলে আর কিছুই হবে না। না হলে এমন কান্ড ঘটতেই থাকবে।
আরো অনেক কথা হয়েছিলো আমাদের মধ্যে। সেসব আর উল্লেখ করলাম না।
রাজাকারেরা দেশের শত্রু।অথচ একাত্তরের রাজাকারদের বিচার এখনো হলো না। এদিকে নব্য রাজাকার সমানে বেড়ে চলেছে। জিয়ার পরিবারের সবাই, জিয়া, খালেদা ও তারেক রাজাকারদের সাথে হাত মিলিয়েছে।এমনকি শেখ হাসিনাও এমসময় মেলাতে গিয়েছিলেন! দুঃখের ব্যাপার যে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা কেউ মুক্তিযোদ্ধা হয়নি, অথচ রাজাকারদের ছেলে, মেয়ে, ভাগনা, ভাগনী, ভাতিজা, ভাতিঝি সবাই রাজাকারই হয়েছে। এরা এখন সারা দেশময় ওয়াজ করে বেড়ায় পাকিস্তানের জন্য কান্না কান্না বয়ান গেয়ে।
আমাদের দেশের জন্ম হোক, তা এরা চায়নি। এরা এখন চায় দেশটাকে আরেকটা পাকিস্তান বানাতে। সে কাজে ওরা প্রায় পুরোটাই সফল। এ দেশের সবাই এখন আবারো পাকিস্তানি চেতনায় বিশ্বাস করত শুরু করেছে। এরা ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলে, যে ভারত না থাকলে স্বাধীন হতে আমাদের আরও বিশ বছর সময় লাগতো। মুক্তিযুদ্ধে প্রান দিয়েছেন তিরিশ লাখ মানুষ, আরও বিশ বছর স্বাধীনতা যুদ্ধ চললে বেচেই থাকত তিরিশ লাখ, বাকি সবাইকে প্রাণ দিতে হত। এরা কাজী নজরুল ইসলাম নিয়ে মাতামাতি করে, আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বলে হিন্দু কবি। ওদের খুব আক্ষেপ যে এ দেশের জাতীয় সংগীতটি একজন হিন্দু কবির লেখা!
আসুন এই রাজাকারদের প্রতিহত করি, আরেকটি ৭১ নিয়ে আসি, বাংলাদেশকে বাংলাদেশ করে তোলার জন্য।
বাংলাদেশকে রবীন্দ্রনাথের অদেখা স্বপ্ন করে তোলার জন্য। আসুন আরেকবার হাতে হাত ধরে দাড়াই, জিয়ার মত গোলাম আযমপ্রেমীদের ঘোষিত বাংলাদেশী না হয়ে আরেকবার মুজিবের বাঙ্গালী হয়ে উঠি।পুরণ করি তার সোনার বাংলার স্বপ্ন।
সাতই মার্চ, ১৯৭১
একটি তর্জনী উঠেছিল সেদিন রেসকোর্সের মাঠে
সেই তর্জনীর প্রতি আমি নত হচ্ছি,
একটি গর্জন উঠেছিল সেদিন রেসকোর্সের মাঠে
সেই গর্জনের প্রতি নত হচ্হি আমি।
এখনও চোখের সামনে একটি দীর্ঘ মূর্তি দেখি,
মূর্তিটি লক্ষ লক্ষ মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে স্বপ্নের কথা বলে,
চেতনার জল মাটি পেয়ে সেই স্বপ্নে বেতস লতার মত বাড়ে।
এখনও একটি তর্জনী আমার সামনে উচু করা,
এখনও একটি গর্জন কানে বাজে -
আমি আন্দোলিত হই, আমি স্বপ্নবান হই।
স্বাধীনতা এখনও অর্জন হয়নি আমার,
পঁচিশে মার্চের রাতে যারা আমার মা’কে ধর্ষণ করেছিল,
তারা আজ আমাকে ধর্ষণ করবে বলে ঘিরে ধরেছে…
আরও একটি যুদ্ধ আমার প্রয়োজন।
(কবিতাটি তসলিমা নাসরিনের লেখা, তার কাব্যগ্রন্থ “আয় কষ্ট ঝেঁপে, জীবন দেব মেপে”তে প্রকাশিত)
ঝাঝা পোস্ট,
অফটপিকঃ- কমেন্ট অফ রাখেন কি জন্য?
তমসো দীপ জুন ১০th, ২০০৯ ৩:১৮ অপরাহ্ন
@ইফ্তেখার মোহাম্মদ,
আসলে কমেন্টও যে অফ থাকতে পারে, আগে আমার আনা ছিলো না।
পোষ্ট করার পর আবিষ্কার করলাম।অনেক ঘাটাঘাটি করে অন করেছি কমেন্ট। ঘাম একেবারে ছুটে গেছে গায়ের।
সেটাই। পোষ্টের বক্তব্যে সহমত প্রকাশ করছি।
ট্র্যাকব্যাকঃ
আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে মন্তব্য করার জন্য!
আমার মেনু
তমসো দীপ
এই পর্যন্ত 22 টি ব্লগ লিখেছেন
প্রিয় পোস্ট
1 জন ব্যবহারকারি এই পেইজটি পড়ছেন!
1 জন অতিথি
সদস্যরা হলেনঃ